এবারের আয়নানগরের লিটল ম্যগ আর্কাইভে রাখা হলো কয়েকজন তরুণ ছাত্র বন্ধুর প্রকাশিত ছোট পত্রিকা ‘হালখাতা‘: ‘কলরবের এক বছর’ সংখ্যা।  অক্টোবর ২০১৫’য় প্রকাশিত এই সংখ্যাটিই হালখাতা দলের প্রথম প্রকাশিত পত্রিকা।  দলে রয়েছেন প্রিয়ক, স্বস্তিক, অর্কজা, তিস্তা, সাম্য, রুদ্রাঞ্জন এবং তাঁদের বন্ধুবান্ধবেরা।
‘হোক কলরব’ ছাত্র আন্দোলনের শুরুর দিনগুলি (সেপ্টেম্বর, ২০১৪) থেকে, ওই একটি গোটা বছর ধরে আন্দোলনের প্রসঙ্গে নানা কণ্ঠ যে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলেছে, উঠে এসেছে যেসব ফিরে দেখা, পুনর্মূ‌ল্যায়ন, বিতর্ক, স্মৃতিচারণ, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার গল্প–সেসবের যতখানি পারা যায় তুলে ধরতেই হালখাতার এই প্রয়াস, যাতে আলোচনা, কথোপকথন ও সর্বাবস্থায় প্রতিবাদের সঠিক পথগুলি খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা জারি থাকে।
Haalkhata - Poster
পত্রিকাটি ডাউনলোড করা যাবে এই লিংক থেকে।
ওঁরা নিজেরা কিভাবে দেখেছিলেন এই গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যাটিকে? তা পড়ে নেওয়া যায় ওঁদের নিজেদের জবানীতেই–

“মলাটের বিষয় কলরব, যার বয়স প্রায় একবছর পেরিয়ে গেল। এখন এই কলেবরে ‘কলরব’ শব্দটা নিয়ে খুব তুলকালাম করার সুযোগ পাওয়া গেল না। সাম্প্রতিক কালে যাদবপুর ‘কলরব’ শব্দটির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ব’লে আর কিছু রাখেনি। এখন কলরব কী এবং কেন–তা নতুন করে ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই। আমরা সে চেষ্টাও করিনি খুব একটা। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাটিতে কলরব নিয়ে টুকরো কথা রইল কিছু। খুব নতুন কিছু যে দিতে পারলাম এমন বলাও বাতুলতা। সবকিছুই প্রথমবার একটু অগোছালো হয় এবং ঠেকে শেখার গ্রাউন্ড তৈরি করে। তবে এই চেষ্টাটুকুর পেছনে যা কাজ করেছে তা হ’ল অপরিসীম ভালোবাসা। ভালোবাসা তাঁদের প্রতি যারা যাদবপুরের কেউ নন, ১৬ তারিখ রাতে মার খাননি; অথচ ২০ তারিখে বৃষ্টি ভিজে হেঁটেছেন নিজের গরজে, তাঁদের প্রতি; যাদবপুরের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্কযুক্ত না হয়েও যারা বাসে ট্রামে রাস্তায় ঘাটে ফেসবুকে কলরবের বিরুদ্ধে একটি কথা শুনলেই ফুঁসে উঠেছেন; সেইসব অটোচালকদের প্রতি যারা যাদবপুরের ছেলেমেয়েদের হয়ে গলা ফাটিয়ে ঝগড়া করেছেন তাঁদের যাত্রীদের সঙ্গে; সেইসব মানুষদের প্রতি যারা বিজয় মিছিলের দিন সব কাজ ফেলে ছুটে এসেছিলেন অফিসের জানলার ধারে সেলাম জানানোর জন্য; সেই ছেলেটির প্রতি, যে যাদবপুরে পড়ার সুযোগ পায়নি, অথচ বাবার সাথে ঝগড়া করে অনশনে যোগ দিতে ছুটে এসেছে; সেইসব সাংবাদিকদের প্রতি যারা যাদবপুরের প্রাক্তনী না হয়েও নাওয়াখাওয়া ভুলে প’ড়ে থেকেছেন, এবং সেই ভদ্রলোকের প্রতি যিনি ১২ জানুয়ারি রাতে উপাচার্যের পদত্যাগের খবর পেয়ে হাঁফ ছেড়ে ব’লে উঠেছিলেন–“বাঁচা গেল”! অবশ্য আমরা ভালোবাসা জানাতে কুণ্ঠাবোধ করবো না সেইসব স্বঘোষিত মিডিয়াকাকুদেরও, যারা জ্বলেপুড়ে খাক হয়ে কুৎসিত থেকে কুৎসিততম গাল পেড়েছেন তাঁদের সন্তানসম ছাত্রছাত্রীদের, সেইসব জ্যাঠামশাইদের যারা নিজ উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছেলেমেয়েদের যাদবপুরে না পড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এদের সকলকে নিয়ে কলরবপর্ব ছিল এক উৎসব। বহুদিন পরেও এই উৎসবকে মনে করে একবার “আহা” ব’লে ওঠা যাবে! তখন হয়তো অন্য কোনো কলরব কলকাতার রাজপথ মাতিয়ে রাখবে।”

2 thoughts on “Little Magazine Of The Month – হালখাতা (কলরবের এক বছর)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.