দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য

Adult, Indian, Male, Normal, Education: Possess Master degree certificate, Loves travelling.
Writing career:
age.           topic
14-16.       Love poems
16-20.       Political pamphlets
21-23         Luv letters
23 -25.      Civil services exam
25 -to date:  Everything from shit to not(e)sheet(example attached)

বছরদুয়েক আগে এক অগ্রজ সম্পাদকের আদেশে মুজতবা সিরাজের “মায়ামৃদঙ্গ” বইটার  মূল্যায়ন করে একটা প্রবন্ধ লিখেছিলাম তাঁর পত্রিকার বইমেলা সংখ্যায়।
তা, গেল বছর মেলায় গেছি তখন এক সমব্যবসায়ী এসে চোখটোখ কুঁচকে ভারী ‘গোপন’ একখানা খবর দিলেন, “দাদা, আপনার সেই লেখাটা না ঝেড়ে দিয়ে আরেকটা লিটল ম্যাগাজিনে ছেপেছে। কাল দেখেছি।”

বললাম, “অন্যের নামে?”
“না না, নামটা আপনারই রেখেছে, কিন্তু পারমিশানটিশান কি নিয়েছে নাকি কিছু? মনে তো হয় না। এইসব জোচ্চোর…”
এহেন দশায় আমাদের ভারী রেগে গিয়ে আকাশের দিকে মুখ তুলে সেই জোচ্চোরের উদ্দেশ্যে দুচারটে গাল দেয়াটাই বর্তমান বাংলাসাহিত্যের নাগরিক পল্লীসমাজের দস্তুর। এই যেমন, ‘কী খচ্চর’,‘দাঁড়াও দেখে নিচ্ছি ব্যাটাকে’, ‘কী সাহস—’ ইত্যাদি। অন্যথায় অভিযোগকারী মনে দাগা পায়। ফলে আমিও বন্ধুকে সুখী করবার জন্য নিয়মমাফিক দু চারপিস কাঁচা দিয়ে তারপর তাঁকে বিদেয় করে পত্রিকাটা খুঁজতে চলে গেলাম।

আসলে আমার মনে বেজায় আনন্দ হচ্ছিল। কারণটা বলি। কপিরাইট নামক বস্তুটার বাংলা সাহিত্যের উঠুনে এমনিতেই কোনো ঐহিক মূল্য নেই, কারণ বাংলা ভাষায় গপ্পো, কবিতা কিংবা জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ লিখে আর যাই হোক পয়সাকড়ি মেলে না। মায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রেকর্ড কপিটা অবধি লেখককে নিজের গাঁটের কড়ি দিয়ে কিনতে হয়, তা সে পত্রিকাটার বেশির ভাগটাই সম্পাদকের ঘরে আবর্জনার মতন জমে থাকলেও। এ ভাষায় লিখে আয় করতে হলে সত্যজিত রায় হওয়া কিংবা ইশকুলের মানে বই লেখা ছাড়া আর তৃতীয় কোন রাস্তা খোলা নেই। প্রথমটা হবার মত মাথার ও দ্বিতীয়টা হবার মত বিদ্যের জোর আমাদের অধিকাংশেরই নেই বলে আমরা আম লেখককূল লিখেটিখে পয়সা রোজগারের স্বপ্ন দেখি না। তার বদলে গল্প, কবিতা এবং সার ও জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধটবন্ধ লিখে থাকি নিজের লেখাটা দশজনে পড়বে সেই আশায়। ফলে কেউ কোন লেখা বিনা অনুমতিতে কোথাও পুনর্মুদ্রণ করে দিলে আমাদের কোন সত্যিকার ক্ষতি নেই। বরং একটা লাভের আশা থেকে যায় যে আরো কিছু বেশি সংখ্যক মানুষ আমার লেখাটা পড়তে পাবেন। (পাঠকলোভী ও পয়সাকাংখী  এ বাদে তৃতীয় একটা লেখকদল আছেন যাঁরা কেবল সৃষ্টির জন্যই সৃষ্টি করেন। তাঁরা সৃজনীশিল্পের ব্রহ্মলোকের বাসিন্দা। এ আলোচনায় তাঁদের আনবার বাঁদরামো নাই বা করলাম)
অর্থবিত্ত নয়, নোবেল, জ্ঞানপীঠও নয়, শুধু আরো বেশি মানুষ তাঁর লেখাটা পড়ুন এইটেই বাংলাভাষার সাহিত্যকর্মীদের একটা স্বপ্ন। অথচ সে পথেও বিস্তর কাঁটা। লিটল ম্যাগাজিনের সম্পাদকের বৌদ্ধিক স্তর যতটা শক্তিমান, পকেটিয় স্তর ততটাই দুবলাপাতলা। তায় আবার ইন্টেলেকচুয়াল হবার দায় মেটাতে তিনি কমপিউটার ইত্যাদি যন্ত্রপাতিতে নিজে হাতে প্রাকমুদ্রণ কাজগুলো সামলে নেবার ঘোর বিরোধী। ফলে পত্রিকার ছাপাই খরচ, কাগজকালির দাম ইত্যাদির সঙ্গে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত জুড়ে বসে ডিটিপি কিংবা গ্রাফিক্সের কাজের খরচ। সেসব সামলে পত্রিকার তিন থেকে পাঁচশো ছেপে বের করতে তাঁর হাঁড়ির হাল হয়। ওরকম ছোট সংখ্যার কোন প্রকাশনাকে বাজারজাত করবার দায়িত্ব পেশাদার ডিস্ট্রিবিউশান এজেন্সিরা নেবেন না তা বলাই বাহুল্য। ফলে কোনমতে পত্রিকা ছেপে বেরোলে এবার সম্পাদকের (এবং তাঁর উপরোধে ঢেঁকি গেলা বন্ধুকূলের) দায় পড়ে তাকে নিয়ে লোকজনকে সাধাসাধি করে তার বিক্রির বন্দোবস্ত করার। সেটাকেও পেশাদারভাবে করা সম্ভব হয় না, কারণ সম্পাদককেও ডালভাতের জোগাড় করতে হয়। ফলে চাকরি সামলে বউবাচ্চার আবদার মিটিয়ে, তারপর যে সামান্য সময়টুকু পড়ে থাকে তাইতেই পরের সংখ্যার প্রস্তুতির সঙ্গে চলে কারেন্ট ইস্যু বেচবার সাধনা। ফল যা হয় তা তো দেখতেই পাই—বের হল তিনশো কপি, কয়েকটা স্টলে সেধেসুধে তার মধ্যে পঞ্চাশ ষাটটা গেল, চেনাপরিচিত লোকজন একটু প্যাট্রনাইজ করে কিছু কিনল, কিছু উপরোধে ঢেঁকি গেলানো হল, আর তারপর বাকি থেকে যাওয়া বেশ কিছু পত্রিকা গাঁটরি বেঁধে চ্যাঙারিতে তুলে রাখা হল।
ফলে একজন লেখক যে লেখাটা বেজায় খেটেখুটে কষ্ট করে লিখলেন সেটা ক্ব্বচিত কদাচিত খুব জোর ওই তিন থেকে পাঁচশোজন পাঠকের হাতে গিয়ে পৌঁছোয়, তাও বেশির ভাগই পুশ সেলের কল্যাণে। উপরোধে ঢেঁকি গেলা ক্রেতা বইটি কিনে নিয়ে দুচারটে পাতা উলটে তাকে বাড়ির আলমারি বা আস্তাকুঁড়ে স্থান দিয়ে বিলকূল বিস্মৃত হন। আমার আপনার অত সাধের লেখাটি অবজ্ঞার ধুলো মেখে কিছুদিন পড়ে থাকে, তারপর ঠোঙা হয়ে উধাও হয়। খুব বেশি হলে একশোজন মানুষ হয়ত লেখাটা যত্ন করে পড়েন (মানে লেখক খুব কপালে লোক হলে)।
এক কথায়, কাগুজে লিটল ম্যাগাজিনে লিখলে লেখকের শ্যাম কূল দুই-ই যায়। পাঠক বা পয়সা কোনটাই জোটে না কপালে। তা, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, যখন শুনি আমার লেখাটা অন্য একটা পত্রিকা ফের একবার ছেপেছে, তখন অনুমতি না নিয়ে, একটা কপিও হাতে করে না দেবার মত চূড়ান্ত  অভদ্রতা আর অসম্মানের আঘাতকে ছাপিয়ে শুধু একটা কথাই মনে আসে, আহা, আরো তিনশোটা লোক তো পড়তে পাবে লেখাটা! বড়ো পরিশ্রম হয়েছিল ওটা তৈরি করতে। গত বছর ওটা বেরোবার পর এই বছরেই তো আর ওর ছাপা কপি বাজারে কোথাও মিলবে না কারো। আরো কয়েকটা মাস তো আয়ু বাড়ল আমার লেখাটার!
এ তো গেল লেখকের দিক। পাঠকের দিক থেকে দেখলে একটা অন্য ছবি সামনে আসে।  তাঁদের ক্ষতির কোন তুলনাই হয় না। কতো অসম্ভব মূল্যবান লেখাই না নিয়মিত বের হয়ে চলেছে অসংখ্য লিটল ম্যাগাজিনে। দু একটা উদাহরণ দিই –
অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের “দা মেকানিকস অব নিউটন অ্যান্ড দেয়ার ইনফ্লুয়েন্স অন দা ডেভেলপমেন্ট অব থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স” নামে অত্যন্ত মূল্যবান লেখাটা পড়েছেন? নিউটনের মৃত্যুর দ্বিশতবার্ষিকীতে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এই অসাধারণ প্রবন্ধটা লিখেছিলেন। কলকাতা থেকে প্রকাশিত “ব্রেক থ্রু” নামের পত্রিকার ২০০৬ সালের জুন ইস্যুতে এ লেখাটা পুনর্মুদ্রিত হয়েছিল।
কাম্বিও পত্রিকায় মার্কেসের লেখা একটা প্রবন্ধ—“গল্পের পেছনে গল্প” প্রকাশিত হয়েছে ‘অনুবাদ পত্রিকা’র শারদ ১৪২১ সংখ্যায়।  পেয়েছেন?
কেশবচন্দ্র সেন-এর পরিব্রাজনের ওপরে একটা মূল্যবান গবেষণাপত্র লিখেছেন প্রবীন অধ্যাপক ডঃ রতনকুমার নন্দী। বেরিয়েছে নৈহাটী উৎসব স্মারকগ্রন্থ ২০১৪ তে।
“সাঁওতালি মিথ কথার অন্বেষণ ও সাহিত্যিক প্রয়োগ”—ঝাড়খণ্ডের ঘাটশিলা কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ তপন মণ্ডলের এই মূল্যবান ও তথ্যসমৃদ্ধ প্রবন্ধটা বেরিয়েছে গুয়াহাটি থেকে বের হওয়া ইন্দোলজির পত্রিকা “ঐতিহ্য”তে।
ক’জন পড়েছেন এই মূল্যবান লেখাগুলো? সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে অনুসন্ধান বা গবেষণা করছেন এমন ক’জন মানুষ খবর পেয়েছেন যে এ লেখাগুলো প্রকাশিত হয়েছে? আর যাঁরা খবর পেয়েছেন তাঁদের কেউ কি এগুলো কোথা থেকে কেমন করে জোগাড় করা যাবে তার কোন রাস্তা জানেন? তাহলে লেখাগুলোর যে আসল উদ্দেশ্য সেইটেই তো মাটি হয়ে গেল। আশা করি মানবেন যে এটা আমাদের সারস্বত সাধনার পক্ষে একটা বড়ো লোকসান।
এখন, এই লোকসানের পরিমাণ কতটা হতে পারে? ক্রমাগত সৃষ্টি হয়ে হারিয়ে যেতে থাকা এই রত্নভান্ডারের আয়তন কতটা? এবারে সে ব্যাপারে খানিক আন্দাজ লাগানো যাক আসুনঃ
কত লিটল ম্যাগাজিন বের হয় জানেন বাংলা ভাষায়? আমি জানি না। তবে একটা আন্দাজ পাবার জন্য কিছু খোঁজখবর নিয়েছিলাম। ‘সৃষ্টিসন্ধান’ নামের ওয়েবসাইটটি সমকালের লিটল ম্যাগাজিনের একটা নামের তালিকা রেখেছেন ওয়েবে। সেইখানে ঢুকে যে তালিকাটা পেলাম তা এ লেখার পরিশিষ্টে জুড়ে দিলাম। সেখানে প্রায় সাড়ে সাতশো পত্রিকার নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই কলকাতা ও সন্নিহিত এলাকার(কিছু ব্যতিক্রম বাদে)। জেলাওয়ারি লিটল ম্যাগজিনের তালিকা খুঁজতে গিয়ে মেদিনীপুর লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরির ওয়েবপেজ থেকে সন্ধান পাচ্ছি দুই মেদিনীপুর মিলিয়ে ২৭৫খানা লিটল ম্যাগের। bankura.org সাইট থেকে জানা যাচ্ছে পঞ্চাশটার ওপরে লিটল ম্যাগ বের হয় সেখান থেকে। এইটুকু নমুনা সমীক্ষা থেকে, সঠিক হিসেব না পেলেও একটা আন্দাজ তো করাই যায় যে কম করেও হাজার দেড় দুই লিটল ম্যাগাজিন নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে চলেছে কেবলমাত্র পশ্চিমবাংলা থেকেই।
বাকি রয়েছে বাংলাদেশ, কাছাড় ও বরাক উপত্যকা, বাকি ভারতের ও বিদেশের বিভিন্ন প্রবাসী বাঙালি সম্প্রদায়ের লিটল ম্যাগাজিন উদ্যোগ, এদের সবগুলিকে জুড়লে সংখ্যাটা ঠিক কোথায় দাঁড়াবে তা আন্দাজ করা একেবারেই সম্ভব নয়। এই বইগুলোর প্রায় প্রত্যেকটাই কিন্তু সেই তিন থেকে পাঁচশো কপি ছাপা হয়, তার কিছু বিলোনো হয়, কিছু বিক্রি হয় আর কিছু থেকে যায় সম্পাদকের বাড়ির চিলেকোঠায় না হলে তক্তপোষের তলায়।
লিটল ম্যাগাজিনের সংখ্যার  একটা মোটাদাগের এস্টিমেট করবার পর এবারে তাতে প্রকাশিত মূল্যবান লেখার সংখ্যা কত হতে পারে, এবারে তার একটা আন্দাজ লাগানো যাক। যে লেখাগুলোর কথা খানিক আগে উল্লেখ করেছি তাদের প্রতিটিই অত্যন্ত উচ্চমানের কাজ। এমন কত কাজ নিয়মিত প্রকাশিত হয় বাংলা ভাষার লিটল ম্যাগাজিনে? আসুন, একটু রক্ষণশীল একটা হিসেব করি। পরিসংখ্যানের ছাত্র হিসেবে আমাদের এ কায়দাটা শেখানো হয়েছিল থাম্ব রুল হিসেবে। যখন প্রাপ্ত তথ্য থেকে কোন নিখুঁত হিসেব সম্ভব হয় না তখন, কোন রাশির মান আন্দাজ করবার জন্যে তার সর্বনিম্ন মান কত হতে পারে তার একটা যুক্তিসঙ্গত আন্দাজ পাবার জন্যে।
ধরা যাক বাংলা ভাষায় নিয়মিত/অনিয়মিতভাবে প্রকাশিত লিটল ম্যাগাজিনের সংখ্যা গড়ে প্রতি মাসে  অন্তত এক হাজার। ধরা যাক সেইসব পত্রিকায় প্রকাশিত কাজগুলোর অধিকাংশই খুব একটা উচ্চমানের নয়। ধরা যাক গড়ে কোন একটা পত্রিকায় একটা ইস্যুতে মাত্রই একটা লেখা উচ্চমানের হয়। (হয়ত সত্যি নয়, কিন্তু একটা আন্দাজি হিসেব করছি।) এই হিসেবটা ধরে এগোলে দেখছি শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় প্রতি বছরে সর্বনিম্ন বারো হাজার উচ্চমানের সৃজনশীল এবং/অথবা সুগবেষিত লেখা বের হচ্ছে লিটল ম্যাগাজিনের পাতায়।
দশ বছরে সে সংখ্যাটা হবে এক লক্ষ কুড়ি হাজার। গত পঞ্চাশ বছরে  তাহলে এই অত্যন্ত সজীব  সংস্কৃতিচর্চার ধারাটি সর্বনিম্ন ষাট লক্ষ উচ্চমানের লেখা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে শতকরা কতটি লেখা তিনশো কপির সীমানার বাইরে বৃহত্তর পাঠকের গণ্ডিতে পৌঁছোতে পেরেছে? শতকরা কতভাগ কাজ কোন বইতে স্থান পেয়ে স্থায়ী হয়েছে? এই বিপুল ইন্টেলেকচুয়াল সম্পদ আমরা সৃষ্টি করে বিস্মৃতির নদীতে তাকে ভাসিয়ে দিয়েছি এবং ক্রমাগত দিয়ে চলেছি এক উন্মাদ সৃষ্টিকর্তার জ্ঞানহীন শিশুসুলভ অজ্ঞতায়।
প্রশ্নটা কিন্তু নতুন নয়। বহুদিন ধরেই তা কিছু মানুষকে ভাবিয়ে চলেছে। উদাহরনস্বরূপ টাইমস অব ইন্ডিয়ার ২০০১ সালের একটা নিউজ রিপোর্টের অংশবিশেষ উল্লেখ করতে চাই—

“–experts who visited the fair on its inaugural day, however, lamented that despite such efforts, west bengal had failed to come out with any anthology or history of the evolution of little magazines. some of them hoped that at least one little magazine editor would come forward and take this responsibility. “only once did a calcutta university student undertake a research project on little magazines, but after that i have not come across any such work. i think editors of little magazines should seriously consider this and prepare a well-researched documentation of the genesis of little magazines in bengal,” said surabhi bandyopadhyay, pro vc, academic, calcutta university. “the term little magazine is a misnomer,” she claimed, “as there is such a vast content in these journals, as well as research-based papers–“

যাঁরা ভেবেছেন তাঁদের মধ্যে একজন ব্যতিক্রম বাদে আর কেউ হাতেকলমে কিস্যু করেন নি। আসুন, যিনি করেছেন তাঁর কথা একটু জেনে নেয়া যাক। ছোটোখাটো, কম কথার মানুষটি আমাদের সবার সম্মানিত সন্দীপদা মানে কলেজ স্ট্রিটের শ্রী সন্দীপ দত্ত মশাই। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে অবহেলায় পড়ে থাকা লিটল ম্যাগাজিনের রেকর্ড কপির গাঁটরির ধুলো ঘেঁটে বীতশ্রদ্ধ হয়ে ২৩ জুন ১৯৭৮ তারিখে তিনি টেমার লেন-এ একটা সংস্থান গড়ে তোলেন। তার নাম কলিকাতা লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি ও গবেষণাকেন্দ্র। থ্রি পেনি অপেরা নাম দিয়ে একটা পিগি ব্যাংক খুলে, আর তার সঙ্গে নিজের রোজগারের একটা অংশ দিয়ে তিলে তিলে তিনি প্রতিষ্ঠানটাকে গড়েছেন। দুটো ঘরের এই লাইব্রেরিতে একলা মানুষের চেষ্টায় এখন  সেখানে প্রায় ষাট হাজার লিটল ম্যাগাজিনের সংগ্রহ রয়েছে। এ লাইব্রেরির দুটো ঘরে পনেরোজন লোক একসঙ্গে বসে বই দেখতে পারেন। কিছু কিছু ডিজিটাইজেশানের কাজও শুরু হয়েছে। শ দেড়েক সদস্য এর সুবিধে নেন  উপস্থিত।
কিন্তু, যে সর্বনিম্ন হিসেবটুকু আমরা করেছি তার অর্ধেকও যদি ঠিক হয়ে থাকে তাহলেও এ চেষ্টা তো সিন্ধুতে বিন্দুবৎ। তাহলে? এত সৃষ্টিধর্মী, গবেষণামূলক কাজ স্রেফ হারিয়ে যাবে? মানুষগুলো কত পরিশ্রমে, কত যত্নে এই সম্পদের সৃষ্টি করেন। তা কি শুধু ওই তিনশো কপির বৃত্তে একটু নড়াচড়া করে বিস্মৃতির পাঁকে তলিয়ে যাবার জন্য? ভাবলে কষ্ট হয় না? এটা কিন্তু একটা জাতীয় ক্ষতি।
তা ছাড়াও যেটুকু সংরক্ষণও এখানে হয়েছে তার নাগাল পেতে হলে একজন পাঠককে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে একটি কাজের দিনে আসতে হবে শহর কলকাতার সেই নির্দিষ্ট গলির নির্দিষ্ট বাড়িটিতে। তারপর অভিনিবেশ সহকারে অনুসন্ধান করে কপাল ভালো থাকলে তিনি তাঁর উদ্দিষ্ট তথ্যগুলোর নাগাল পেতেও পারেন , না-ও পেতে পারেন।
একটা সময় প্রযুক্তির যে স্তরে আমরা ছিলাম তাতে হয়ত এইটেই একমাত্র পন্থা ছিল রেফারেন্স স্টাডি করবার। বেচারা হিউয়েন সাং এর কথা ভাবুন। সে ছিল কালিদাসের সামান্য কিছুকাল পরের সময়ের কথা। তারপর দিনকাল বদলেছে। অথচ একুশ শতকের বাংলায় লিটল ম্যাগাজিন উদ্যোগের আজও যা দশা তাতে তার সিংহভাগটাই হারিয়ে যায় উপযুক্ত পাঠককে বঞ্চিত করে; আর যেটুকু বাঁচানো হচ্ছে তার নাগাল তো বৃহত্তর বাংলা পাঠকের পাওয়া সম্ভবই নয়, এ নিয়ে নিছক অর্কাইভাল স্টাডিও যদি ভারতের অন্য কোন প্রদেশ বা বিদেশে থাকা কোন পণ্ডিত গবেষক করতে চান , তাহলে তার যে তুচ্ছাতিতুচ্ছ অংশ অর্কাইভ করা হয়েছে তার সন্ধানে তাঁকেও সেই হিউয়েন সাং হতে হবে। পোঁটলাপুঁটলি ঘাড়ে করে কলকাতায় এসে টেমার লেনে গিয়ে ঢুকে বসতে হবে, অথবা ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে সশরীরে এসে ধুলো ঘাঁটতে হবে বসে বসে। ফলত বাংলা লিটল ম্যাগাজিনে প্রকাশিত সাহিত্যকে নিয়ে এ জাতীয় কোন কাজের স্বপ্ন দেখাটাও এখনকার পরিস্থিতিতে হাস্যকর।
কী করা যায়?
ইন্টারনেট আসা ও তার সহজলভ্য হয়ে ওঠবার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা লিটল ম্যাগাজিনের সাহিত্যসম্ভারকে বৈদ্যুতিন সংরক্ষণ ও তাকে বৃহত্তর পাঠকের দরবারে পৌঁছে দেয়াটা এখন প্রযুক্তিগতভাবে আর অসম্ভব নয় মোটেই। কিন্তু রাজ্য জুড়ে ক্রমাগত প্রকাশিত হয়ে চলা বাংলা লিটল ম্যাগাজিনের অন্তত একটা বড়ো অংশকেও ডিজিটাইজ করে ইন্টারনেট অর্কাইভিং-এর কাজটা স্বাভাবিক কারণেই কোন একক ব্যক্তির সাধ্যের বাইরে। এ কাজটাকে কেন্দ্রীয়ভাবে করার জন্য সরকারী উদ্যোগের প্রয়োজন আছে। একমাত্র সরকারের কাছেই সেই প্রয়োজনীয় মেশিনারি রয়েছে যাতে করে প্রতিটি জেলা, ব্লক ও পূরস্তর থেকে প্রকাশিত হয়ে চলা লিটল ম্যাগদের একটা করে কপি সংগ্রহ করে তাকে ডিজিটাইজ করে  অর্কাইভিং করা সম্ভব হয়। দরকার শুধু একটু সদিচ্ছা আর সুপরিকল্পনার। কিন্তু সমসময়ের  বাতাবরণে তা যে সম্ভব নয় তা বলাই বাহুল্য। গত পঞ্চাশ বছর ধরে তিনটে আলাদা আলাদা মতাদর্শের দল এ রাজ্যে রাজত্ব করে গেছে। কেউই এ ব্যাপারটা নিয়ে কোন সুষ্ঠু একটা কেন্দ্রীভূত পরিকল্পনা নেবার কথা কল্পনাতেও আনে নি। আসলে জল, খনিজদ্রব্য, ভোটব্যাংক ইত্যাদির মতন এটাও যে একটা অমূল্য সম্পদ সেই বোধটাই ইলেকশনভিত্তিক ডেমোক্রেসির বাতাবরণে বড়ো হয়ে ওঠা দেশনেতাদের মাথায় আসবার কথা নয়, আসেও নি। কেন আসে নি তার বিচার হয়ত কখনো করবে ভবিষ্যতের সমাজ, কিন্তু সে নিয়ে এখন আলোচনা করাটা অর্থহীন, যেমন অর্থহীন এ প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের ব্যতিব্যস্ত করাটাও। অসম্ভবের স্বপ্ন দেখাটা কোন কাজের কথা নয়। ওতে সময়ের অপচয় বই আর কিছু হয় না। এদের দিয়ে এ ব্যাপারে কিচ্ছু হবে না, এইটেই একমাত্র সত্যি কথা।
তবু, কিছুটা কাজ করা যায় ব্যক্তিগত উদ্যোগেও। অন্তত খানিকটা ক্ষতিকে আটকানো তো যায়ই। এবারে সেইদিকটা নিয়ে খানিক কথা বলে এ আলোচনায় দাঁড়ি টানব।
প্রযুক্তিগত পদ্ধতিটার একটা রূপরেখা দেয়া যাক প্রথমে।
ধরুন আপনি একজন লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদক। আপনার একটা জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকলে ভালো, না হলে একখানা খুলে ফেলুন। দু মিনিট লাগবে। গুগল ওতে আপনাকে ২৫ গিগাবাইট বিনিপয়সার ক্লাউড স্টোরেজ দিয়ে দেবে। বাকি কাজটা হল, আপনার পত্রিকা যেখানে কম্পোজ হয় তাদের গিয়ে মেক আপ করা পত্রিকাটার একটা পিডিএফ কপি দিতে বলা। ওর জন্যে পয়সা লাগবে না। এইবারে পিডিএফ কপিটা এনে আপনার গুগল ক্লাউডে তুলে দিন। সেখান থেকে আপনাকে একটা লিংক দিয়ে দেবে। এবারে পত্রিকাটার কপি একটা স্থায়ী ঠিকানা পেল। সেটা আর হারাবে না। যদি ইচ্ছে হয় তাহলে ব্লগস্পট , ওয়ার্ডপ্রেস বা সেই জাতীয় যেকোন কোন প্রতিষ্ঠানে থেকে বিনিপয়সার একটা ব্লগ খুলে নিন। আপনার হাতের ইন্টারনেট এনেবলড মোবাইল ফোনটা থেকেই তা করতে পারবেন। কমপিউটার লাগবে না। আপনার নিজস্ব ব্লগটার নাম দিন পত্রিকার নামে। সেখানে একের পর এক ইস্যুর লিংকগুলো সাজিয়ে দিন। পৃথিবীর যে কোন কোণ থেকে যে কোন মানুষ আপনার পত্রিকাটি পড়তে পাবেন বিনা আয়াসে। ভয় নেই, আপনার তিনশো কপি ছাপা পত্রিকার বিক্রির ওতে কোন ক্ষতি হবে না। এটা পরীক্ষিত সত্য, কারণ আমার পত্রিকা জয়ঢাক ২০০৭ ও আট সালে কাগজ থেকে ওয়েবে বদলের সময়টাতে কাগজ ও ওয়েব দুই চেহারাতেই বের হত। তখন ওয়েবে বিপুল পাঠকসংখ্যার পাশাপাশি কাগজের তিনশো কপিও একইরকম ঠেলে গুঁতিয়ে বিক্রি করেছি। সমস্যা হয় নি। যে কেনবার সে ওয়েবে থাকলেও কিনবে। না থাকলেও।
এহেন ব্যাক্তিগত উদ্যোগের বাইরে এই মুহূর্তে কিছু প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগও শুরু হয়ে গেছে এ নিয়ে। তাঁদের মধ্যে রয়েছে কাঠের নৌকা। এঁরা পূর্বোত্তর ভারতে প্রকাশিত যত বাংলা পত্রপত্রিকা রয়েছে তাদের ডিজিটাইজড কপি যথাসম্ভব সহজলভ্য করে তোলবার মিশন নিয়েছেন। সেখানে যে লিটল ম্যাগদের ঠাঁই হয়েছে, তার পাঠকসংখ্যা নয় নয় করেও এই মুহূর্তে বারো হাজার।
দ্বিতীয় আর একটা উদ্যোগ নিয়েছেন মেদিনীপুর লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরি
এলাকাভিত্তিক নয় এমন উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে পদক্ষেপ। এ সাইটের “কাগজের পত্রিকার ইন্টারনেট সংস্করণ” পাতায় এই মুহূর্তে এগারোটি সমসময়ের বাংলা কাগুজে লিটল ম্যাগাজিনের ডিজিটাইজড ভার্শান সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সংযোগসূত্র দেয়া আছে বঙ্গদর্শন, প্রবাসী সহ বহু পুরোনোদিনের মূল্যবান কাগুজে পত্রিকার ডিজিটাল কপির। এ সংস্থার দরজা খোলা রয়েছে প্রত্যেক লিটল ম্যাগের জন্যই। আপনার পত্রিকাটার পিডিএফ কপি বা লিংক ওখানে পাঠালে  তা আন্তর্জালে তুলে রাখা হবে বিনি পয়সায়। এগিয়ে আসুন না একবার! আপনার পত্রিকাটা তার মূল্যবান লেখাগুলোকে নিয়ে পৌঁছে যাক না বিশ্বজোড়া বাঙালি পাঠকের দরবারে! ওপরে বলা পদ্ধতিতে আপনার পত্রিকার যে পিডি এফ কপি বা যে লিংকটা আপনি তৈরি করলেন, সেটিকে কেবল মেইল করে দিন এইসব উদ্যোগের মেল আইডিতে। সেখানে তারা একত্রিত হয়ে অপেক্ষা করবে বৃহত্তর পাঠকের পদপাতের জন্য।
আরো একটা কথা। পত্রিকার জন্য খরচ তো আপনারা অনেকই করেন! মাইনের টাকা বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে,কখনো টিউশনের টাকা দিয়েও পত্রিকা বের করেন। এক কাজ করুন না! একদিন একটা দোকানে গিয়ে, বা কোন বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আপনার পত্রিকার সবকটা সংখ্যাকে স্ক্যান করে ফেলুন না! খুব বেশি খরচ হবে না। একদিন আইনক্সে সপরিবারে সিনেমা দেখতে যেতে, কিংবা কুটুম্বের বিয়েতে  দামী উপহার দিতে যা খরচ হয় তাতেই অনেকগুলো ইস্যুর স্ক্যানিং হয়ে যাবে দেখবেন। তারপর সেগুলোর পিডিএফ কপিগুলোকে সাজিয়ে দিন ইন্টারনেটের পাতায়। ওয়েবসাইটটাইট বানাতে হবে না। সেইখানটায় আপনার জন্য সাহায্যের হাত দু একটা এই মুহূর্তেই বাড়ানো আছে। এখন আপনার এগিয়ে আসবার অপেক্ষা।
এ তো গেল সম্পাদকের কথা। লেখকের দিক থেকেও একটা কাজ খুব একটা কঠিন নয়। শ্রদ্ধেয় প্রবীণ সাহিত্যিক শিশির বিশ্বাস মশাই করেছেন কী, http://sisirbiswas.blogspot.in/ নামে একটা ব্লগ খুলে নিয়েছেন। সেইখানে একে একে সাজিয়ে রাখছেন তাঁর সেইসমস্ত অসামান্য লেখাগুলো যেগুলো কাগজের পত্রিকায় নানান সময়ে ছাপা হয়ে অত্যন্ত সীমাবদ্ধ পাঠকের গণ্ডিতে আটকে ছিল। মাত্রই কিছুকাল হল তৈরি হওয়া এই ব্লগটতে তাঁর লেখা এরই মধ্যে পড়ে ফেলেছেন ন হাজারের ওপর পাঠক, তাঁদের অধিকাংশই টালা থেকে টালিগঞ্জ গন্ডির বাইরে দূরদূরান্তে ছড়িয়ে থাকা পড়ুয়া মানুষজন, যাঁরা এই পদ্ধতিটা না হলে হয়ত কোনদিনই সেই অসাধারণ লেখাগুলো পড়তে পারতেন না, যেমন একজন লেখকও এত অল্প সময়ের মধ্যে এত বিপুল সংখ্যক পাঠকের আশীর্বাদ পেতেন না তাঁর লেখাগুলোর জন্য।
তাই লেখকমশাইদের বলি, ২৬ নম্বর ট্যাংরা অ্যাভেনিউ থেকে বের হওয়া বত্তিরিশ পাতার কোন লিটল ম্যাগে আপনি যে লেখাটা ছেপেছেন (এবং যার রেকর্ড কপিটা আপনাকে কিনে নিতে হয়েছে, সঙ্গে বিক্রি করবার জন্য দশটা কপি এক্সট্রা) সেটা যদি আপনার মতে সত্যিই একটা ভালো লেখা হয়ে থাকে, যা আপনার মতে অনেক বেশি মানুষের পড়া প্রয়োজন, তাহলে অপেক্ষা না করে এই কাজটা করে ফেলুন। ইন্টারনেট নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই। নিজে না পারলে বাড়ির বা পাড়ার কোন কিশোর বা কিশোরীকে ধরুন। একশোর মধ্যে নব্বইটা ক্ষেত্রেই দেখবেন সে কাজটা চট করে বুঝে নিয়ে শিখিয়েও দেবে আপনাকে।
সম্পাদক এবং লেখক দুপক্ষই যদি এইভাবে এগিয়ে আসেন তাহলে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়ে চলা এই বিপুল সম্পদের অনেকটাই খানিকটা স্থায়ীত্ব পেতে পারে এবং বৃহত্তর পাঠকগোষ্ঠীর নাগালে চলে আসতে পারে।
সত্যি কথা কী জানেন, ভালো সাহিত্যের পাঠক আছেন প্রচুর। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছেন সুশিক্ষিত, সচেতন বাঙালি পাঠক। গত কয়েক দশক ধরে এ রাজ্যের সুতীব্র অর্থনৈতিক অবনমনের ফলে একটু ভালো পড়াশোনা করছেন যাঁরা তাঁরা সবাই কাজের খোঁজে গিয়ে উঠছেন ভারত ও পৃথিবীর নানান জায়গায়। ফলত, বাংলার মেধাসম্পদের একটা বড়ো অংশই এখন এ রাজ্যের বাইরে, এবং এ প্রক্রিয়াটা প্রতিদিন আরও বেশি গতি পাচ্ছে। তিনশো কপির কাগজের গণ্ডিতে টালা থেকে টালিগঞ্জে আটকে থাকলে এই বিরাটসংখ্যক সচেতন পাঠককূলের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যাবে আমাদের সিরিয়াস সাহিত্যপ্রচেষ্টার ফলগুলো। তাতে একদিকে যেমন লেখকের ক্ষতি, অন্যদিকে এই বিপুলসংখ্যক মেধাবি পাঠকূলের ক্ষতিটাও কম নয়।
অন্যদিকে ভালো লেখকও কম নেই এ ভাষায়। প্রতিনিয়ত লিটল ম্যাগাজিনদের হাত ধরে সৃষ্টিও হয়ে চলেছে অগণিত মূল্যবান সৃজনধর্মী , গবেষণামূলক সাহিত্যকীর্তি। অভাব শুধু একটা উপযুক্ত সেতুবন্ধের। কাগজে ছাপা লিটল ম্যাগাজিন  সেই সেতু হবার যোগ্যতা রাখে না। অপরদিকে ইন্টারনেটভিত্তিক অর্কাইভিঙের জন্য নিখরচার অনেক রাস্তাই তৈরি হয়েছে যার কিছু কিছু ওপরে আলোচনা করলাম। আসুন না, নতুন যুগের নতুন প্রযুক্তিতে ভর করে লেখকপাঠকে একটা শক্তপোক্ত সেতুবন্ধ গড়ে তোলা যাক। ওই পথে বাংলার সৃষ্টিকর্মের মুক্তির দিশা রয়েছে।
পরিশিষ্ট
সৃষ্টিসন্ধান কৃত পত্রিকা তালিকা : 
অ, অক্ষর যাত্রা, অজল, অবগুন্ঠন, অর্ঘ্য, অম্বেষা সাহিত্য, অত্যল্প, অতন্দ্র পথ, অব্যয়,  অবভাস, অঙ্কুশ, অঞ্জলি লহ মোর, অতিথি, অনুষ্টূপ, অন্তরীক্ষ, অন্যভূমি, অভিঞ্জান, অভিরুচি, অভিযান, অভিযান সাময়িকী, অমৃতপুর,অমৃতলোক, অল্প কথায় গল্প পত্রিকা, অনুবাদ পত্রিকা, অহর্নিশ, অজয়, অঙ্গার, অনীক, অনুভবপত্র, অভিনব অগ্রনী, অনুভব, অঞ্জস, অর্যমা, অন্য শতাব্দীর চিত্রকল্প, অনার্য্য, অন্যচোখ, অব্যক্ত, অ্যাকোয়েরিয়াম, অ্যাকাদেমি অফ বেঙ্গলী পোয়েট্রি,
আত্মেষা, আনন্দম, আরও কিছু, আহবকাল, আগামী সাহিত্য, আলাপন, আকিঞ্চন, আকীর্ণ, আজকের কবিতা, আজকের কাদম্বরী,  আজকের যোধন, আড্ডা, আধুনিক কবিতা, আন্তর্জাতিক ছোট গল্প, আপনজন, আর্য সাহিত্য পত্রিকা, আশাবরী, আবহ, আয়না, আশার আলো, আহ্বান, আড্ডা শনিবার, আনন্দ দিশারী, আহির, আরাত্রিক, আশা, আয়না, আমাদের জন, আঁধার হাওয়া, আবিষ্কার, আদম, আগন্তুক সাহিত্য পত্রিকা, আজকের সংবাদ দর্পন, আলোর পাখি, আজকের প্রতিধ্বনি, আনন্দ লহরী, আবহমান, আগন্তুক,  আত্মবিকাশ,
ইচ্ছেডানা, ইদানীং, ইস্ক্রা, ইচ্ছে কুসুম, ইন্দ্রাণী সাহিত্য, ইস্পাতের ফুল, ইন্টারেকশান,
ঈক্ষণ, ঈশান,
উত্তরাঞ্চল, উত্তর তরঙ্গ, উজ্জ্বল এক ঝাঁক উন্মেষ, উপলব্ধি কথা, উন্মুখ উপাংশু, উন্মুক্ত উচ্ছ্বাস, উজাগর, ঊর্মিমুখর, উত্তরন, ঊর্মি, উল্কা, উত্তর ইতিহাস, উত্তরপথ, উত্তরবাংলা  টাইমস, উদ্ভাস,
ঋত, ঋতি, ঋ, ঋণণ,
একক মাত্রা, এবং সমুদ্র, এই সহস্রধারা, একলব্য, একুশ শতাব্দী, এখন সময়, এবং উত্তরঙ্গ, এবং একুশ, এবং প্রিয়শিল্প, এবং মুশায়েরা, এবং সায়ক, এষণা, এবং এখন কবিতা, এবং অন্যকথা, এখন নৈঋত, একক আসর, এষা, এবং আমরা, এখন ভাবনা, এখন প্রতিচ্ছবি, একতারা, এবং বাউল, এবং জলার্ক, এখন, একুশ, এবড়ো খেবড়ো রং,
ঐকতান গবেষণা পত্র, ঐক্য,
কবিতা কবিতা, কবিতা কলকাতা,  কবিতা আলোচনার ত্রৈমাসিক, কবিতা এক্ষণ, কবিতা বারোমাস, কবিতা সীমান্ত, কবোষ্ণ, কলতান, কনিকা, কান্ডারী, কানাকড়ি, কর্ণ, কথা সাময়িকী, কবিতাঙ্কুর, কবিমন, কলকাতা পুরশ্রী, কবিয়াল, কারুকথা, কারুভাষ, কালিমাটি, কাহ্ন, কৃত্তিবাস, কৌষীতকি, ক্যানভাস, ক্রন্দসী সাহিত্যপত্র, ক্রৌঞ্চী, কাব্যমঙ্গল, কবিতা  ঋকবৈদিক, কবি সংলাপ, ক্লেদজ কুসুম, কবিতা এক্ষণ, কিঞ্জল, কবিপত্র, কোরক, হিত্য পত্রিকা, কবিতা ক্যাম্পাস, কবিকথা, কবি সংলাপ, কবিতার সোঁতা, কাগজ কলম এবং, কলাবতী, কালধ্বনি, কালপুরুষ, ক্রান্তিকাল, কবিতা আমি, কবিতা ইস্তাহার, কবিতা প্রতিমাসে, ক্যামেলীয়া, কাঞ্চিদেশ, কপাল, কপোতাক্ষবন্ধ, কালি ও কলম, কঙ্ক, ক্রুসেড, কবিতা বাসর, কালপ্রতিমা সাহিত্যপত্র, কবীর, কবিকল্প,
গল্পবিশ্ব,গল্পের কাগজ, গোধূলী মন, গ্যবিটো, গোধূলী, গল্পমেলা, গল্প সরনি,
ঘুম নেই,
চারুলতা, চিন্তন, চিত্রক কবিতা পত্রিকা, চিরঞ্জীব, চতুষ্কোণ, চতুরঙ্গ, চিত্রোক্তি, চিত্রলেখা, চিত্রভাষ, চারুবাক, চারু পত্র, চিত্রা, চেতনার ডালি, চৈতালী সাহিত্য, চেতনা, চিলেকোঠা,
ছন্নছাড়া, ছেলেবেলা,
জনপদ কথা, জিঞ্জাসা, জিগীষা, জলপ্রপাত সাহিত্য, জনপদ প্রয়াস, জনপথ, জীবন দর্শন, জাগরী, জাগরন, জলার্ক, জলসিড়ি, জারি বোবাযুদ্ধ, জনতার নয়া সমাচার, জাতীয় সমচিন্তন, জীবন কুচি,
ঝড়ো হাওয়া, ঝড়,
ঠেক,
ডোডো, ডিঙি,
ত্বষ্টা, তবুও তৃণমূল, তবুও প্রশ্ন, তাঁতঘর, তৃতীয় দুনিয়ার সাহিত্য, তীব্র কুঠার, তিরপূর্ণি, তেজা, তত্ত্ববোধিনী, তিতির, ত্রিষ্টুপ, তিস্তা নন্দিনী, তবু একলব্য,
থিয়েট্রিক্যাল, থিয়েটার প্রয়াগ,
দীপ্রকলম, দীপ্রকলম ও আলেখ্য, দূরবীনের চোখ, দুর্বাসা, দূরত্ব, দূর দিগন্ত বলাকা, দূর দিগন্তে, দীঘল পত্র, দিগন্ত বলয়, দিগন্ত বলাকা, দুর্বার সাহিত্য পত্রিকা, দৃক্, দেবযান, দেশ আমার মাটি আমার, দিবা রাত্রির কাব্য, দশদিশি, ডুলুং, দশ, ধ্রুবপদ, দাহপত্র, দধীচি, দিনযাপন, দীপকলম, দ্রিমিত, দাঁড়কাকের বাসা, দিল্লী হার্টস,
ধোয়া তুলসী পত্রগুচ্ছ,
নব পল্লব, নব নক্ষত্র বন্দনা সেন, নীড়, নিহত বাতির ক্রোমোজোম, নাগরিক, নতুন গল্প, নাটমন্দির, নাট্যকথা, নাট্যপত্র, নান্দীমুখ, নিক্কণ, নির্বেদ, নীললোহিত, নৌকো সাহিত্য পত্র, নীলাকাশ, নীল নির্জন, নাট্যপত্র থিয়েটারঙ্গ, নাট্যাম্বেষী, নতুন গতি , নৈঋত, নব নান্দিক, নাইন্থ কলাম, নতুন শতক, নতুন কবিতা, নক্ষত্র, নীরাজনা, নীল অপেরা,
পরিচয়, প্রগতি, প্রথম আলো, পল্লীর সুর, প্রিয়ংবদা, প্রোরেনাটা, পদক্ষেপ, পরিশীলন, পুন্ড্ররাঢ় বঙ্গের লোকসংস্কৃতি, পরশুরাম, পত্রী, পরিকথা, পরিষদ সাহিত্য পত্র, প্রান্তছায়া, প্রাবৃতি, প্রিয় সঞ্চয়ন, প্রেরণা, পর্বান্তর, পুরবৈয়াঁ, পরশ, পদ্যচর্চা, পদ্মা গঙ্গা, প্রগতি সংস্কৃতিপত্র, পোয়েইমা, পোতাশ্রয়, পারক, প্রিয় দিগন্ত, পাণ্ডুলিপি, প্রকর্ষ, প্রিয়পত্র, পাতাবাহার, প্রবাসে নিজভাষে,  পারিজাত মালা , পোয়েট্রি রিভিউ, পরিসর, পরবাস, পরিপ্রশ্ন, প্রয়াস, প্রতীচী,
ফেরারী,
বন্দর, বৃহস্পতি, বঙ্গ ভাষা সংস্কৃতি, বাসভূমি, ব্যত্যয়, বসুধা, বাতায়ন, বৃষ্টি, বৃষ্টিদিন, বইমেলা, বাল্মীকি, বাল্মীকি স্মরণ, বলাকা, বাংলা, কবিতা, অ্যাকাদেমি, বিভাব,  বিকল্প, বর্তমান, বোধশব্দ, বাহিরানা, বিহান, বলাকা সাহিত্য পত্রিকা, বাংলার আভাষ, বিনির্মাণ, ব্যতিক্রমী, বনানী, বিশ্বভারতী পত্রিকা, বোহেমিয়ান, বাংলার আভাষ , বিঞ্জাপন পর্ব, বর্ণিক, বৈশাখি, বাতিঘর, বক্তব্য,
ভাষাবন্ধন, ভাবনাচিন্তা, ভাস্কর, ভার্সেটাইল, ভালোবাসা, ভাষা, ভাষাভাবনা, ভবিষ্যৎ
মগ্নশিল্প, মনের কথা, মান্দাস, মাধুকরী, মিলেমিশে, মন্থন সাময়িকী, মানবমন, মৌহারি, মহাপৃথিবী, মৌলতপ, মহাদিগন্ত, মেঘদূত, মেঘ রুচি, মহাযান, মঞ্জরী সাহিত্য পত্র, মায়া মেঘ, মাটির কাছাকাছি, মল্লার,
যুক্তিবাদি, যুগপট, যখন প্রত্যাশা, যখন প্রত্যাশা,
রাজধানী, রঙ্গ ব্যঙ্গ রসিকেষু, রূপাম্বয়, রক্তমাংস, রাখালিয়া, রোদে ধান ছায়ায় পান, রসাতল, রক্তচাপ, রবিশস্য,
লালন, লেখক সমাবেশ, লোক,  লোক (বাংলাদেশ), লোকায়ত,  লোকসংস্কৃতি, লগ্ন উষা, লিটল ম্যাগাজিন সংবাদ, লুব্ধক, লোকমানস,
শ্রুতস্বর, শায়ক, শ্রুতি নাটক বার্তা, শুভ্র মঞ্জরী, শহর, শৈলদহ, শূন্য, শিল্পীতশরক্ষেপ, শরৎশশী, শব্দভেদী, শিলীন্ধ্র, শব্দ,   শাব্দিক, শতপর্ণী, শৈলী, শ্রয়ণ, শব্দের ঝঙ্কার,
সাহিত্য, সম্ভাবনা, সাহিত্য পর্যাস, সুজনেষু, সহজাত সাহিত্য পত্রিকা, সূযাতৃষ্ণা, সমীক্ষাপত্র, সেই সন্দীপন, সাহিত্য সৈকত, সচেতন, সাগ্নিক, সাম্প্রতিক উত্তরণ, সঙ্গীত তরঙ্গ, সৃজনী, সৃজনকথা, সাংস্কৃতিক সমসময়, সমকন্ঠ, সাংস্কৃতিক সমধ্বন , সাহিত্য সৃজনী,  সন্ধিকাল ও পদক্ষেপ, সত্যিকথা, সমকাল, সমকাল ও বিবৃতি, সংকেত, সহজ, সাইন্যাপ্স্, সাজি, সারণি, সাহিত্যপত্র, সাহিত্যমন্দির, সাহিত্য সমাজ, সাহিত্য সেতু,সৌরভ সাহিত্য পত্রিকা, স্মৃতি সত্তা সম্ভাবনা, স্বপ্ন অনুঘটক, সবুজ বার্তা, সাহিত্য সঞ্চয়,  সোহেল সাহিত্য পত্র, সাহিত্য কন্ঠস্বর, সমম্বয়, সাঁঝবাতি, সাতসকাল, সুন্দর, সৃজন, সমাজ সমীক্ষা, সময় তোমাকে, সাহিত্য বিসারী , সংলাপ, সম্বিত, সময়ের শব্দ, স্বদেশ, সহজ পাঠ, সূর্য তৃষ্ণা, সুকান্ত, সৃজন সংকেত, সমকল্য, সাঁকো,
হরিণা হরিণীর, হে মানবজীবন, হৃদয়,
২৪শে উত্তর, ১৯শে মে।

7 thoughts on “বাংলা লিটল ম্যাগ ও ডিজিটাল অর্কাইভিং— কিছু কথা

  1. আমার সম্পাদিত কবিতা ও কবিতাবিষয়ক ষান্মাষিক পত্রিকা ‘ কবিতাজগৎ ‘-
    সম্পাদক- গোবিন্দ তালুকদার
    রসিদপুর. পোস্ট _ বুনিয়াদপুর
    জেলা – দক্ষিণ দিনাজপুর ( প.ব..)
    733 121
    দূরভাষ- 94341 94124
    97328 35996 ঋদ্ধ হলাম –

    1. গোবিন্দবাবু, আপনার পত্রিকার পুরোনো কপিদের স্ক্যান কপির পিডি এফ যদি পাঠান তাহলে সেগুলো ইন্টারনেটে অর্কাভিং এর ব্যবস্থা করে দেব।
      দেবজ্যোতি ভট্টাচার্য

  2. খুব ভাল ও সুচিন্তিত একটা পোস্ট। সবাইকে সাহায্য করা উচিৎ।

  3. খুজতে ছিলাম শিব নারায়ন রায় সম্পাদিত জিজ্ঞাসা, পেলাম অসাধারন একটি চিন্তা এবং কাজ। খুব ভালো লেগেছে। ঋদ্ধ হলাম আমিও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.