উত্তরবঙ্গের বন-বসতি-মানুষ নিয়ে কাজ। তথ্যচিত্রকার। সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনের কবি।
বয়স
এক
কারা ঘুম পিতলপাত্রে রাখবার কথা বলেছিলো?
কাদের দাঁত হলুদ, চামড়া পুরোনো বাকলের মতো খসখসে
কাদের হাড় শক্ত, ভঙ্গুর, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলে
কারা সংশ্লিষ্ট অণু-পরমাণু থেকে বিচ্ছুরণের মতো আলগা
গতি পায়
এককোষী প্রাণী, শিলালিপিবদ্ধ মাছ, গড়িয়ে গড়িয়ে যাওয়া
অসংখ্য বয়োবৃদ্ধ দিন
চকচকে ফয়েলপ্যাকে মোড়া, খাওয়া হলে ছুঁড়ে ফেলা
হবে নদর্মায়
.
দুই
দাদাভাই, দিদিভাই, খুকুমণি খোকামণি,মায়ের আদর খাওয়া
হাঁস
এই রাত চলে যাচ্ছে বেওয়ারিশ কুকুরের মতো,অন্যান্য
রাতের পাড়ায়
রোম খাড়া হয়ে উঠছে কুঞ্চনে… শালা চাপ হাটাও
এক্ষুণি আকাশ থেকে নেমে আসে সিগন্যাল সরকারী বিশেষ
প্রহরায়
ইচ্ছাপূরণ হতে পারে, যদি পাছা উঁচু করে,হাত বাড়িয়ে
দাঁড়ানো যায়
জোট বাঁধো তৈরী হও জিঙালালা
.
তিন
থুতুতে মিশছে ভাগীরথি, জল গেছে পরিশুদ্ধ হতে উচ্চারণে
কোনদিন শহর দ্যাখেনি যে সকল ফড়িং-এর জীন
তাদের আরো উত্তেজিত করে
গান গাইছে কল-সেন্টার, লাল নীল বাক্স, বাক্স ভরা ঘর
তেঁতুল গাছের নীচে যে মায়া সুপ্ত হয়ে ছিলো
তামাম নিকেশ করে
হেউ তুলছে তৃপ্ত কোলাহল
এসো ব্যাঙ লাফাই, এসো সবুজ ঘাসের বনে,
তরুণের, তরুণীর মতো
হারিয়ে যাই : চন্দ্রনগর জ্বলে শূন্য ঘটিকায়
.
চার
যারা সব আতা পাকবার দিনে বেড়াতে যাবার কথা ব’লে
শুধু কঙ্কাল হয়ে ছিলো
তাদের মা কসম, কোন বন্দরে আর নৌকা চেনাতে যাবো না
এতদ্অঞ্চলে ফেনা দেখা যাবে কৃষকের মুখে
আত্মহত্যাকামী নাশকতা মাথা চাড়া দেবে
আমরা কি করবো, যারা এতদিন সারিবদ্ধ
বাজারঘন ফল?
বাড়িসুদ্ধ ক্রেতা-বিক্রেতা আর কৌটো কৌটো স্ট্রবেরী
লাল মুখ দে লাল মুখ দে লাল মুখ দে লাল
যতক্ষণ না দেয়াল ভেঙে আবার নতুন করে ওঠে
যতক্ষণ না দেয়ালে কিছু লেখা হয় বিপ্লবযমুনা
তারাও তৈরী আছে, যে কোন মুহূর্তে
ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে আন্দোলন
.
পাঁচ
ঘুম ভাঙা হোক, ঘুম,ভাঙা হোক, দপ্ করা আগুনের মতো
এসো পথ দেখাই, এসো সঞ্চরণ, এসো ভিতরে ভিতরে নদী
বন্য বিবসন
কালো উনুনের মাটি, গুলিবিদ্ধ সমস্ত কিশোর
যাদের পিঠের ছাপ শুক্লপক্ষে রাখা ছিলো
.
বাজার
দ্রব্যসামগ্রী ফেলে দিলে, কচি ঘাস খুঁজে নিলে
নির্বুদ্ধি হরিণ?
ভুলে গেলে শপার্স স্টপ, হাত বাড়ালে ডাঁটাসুদ্ধ কুঁড়ি
যা ক্রমে পদ্ম হবে, তুমি বাজার ধামসাবে নিশিদিন
আমোদে প্রমোদে রাত ছড়াবে মিহিন কস্তুরী
বেড়াল রাস্তা কেটে দিলো, গাড়ি থেমে থাকলো ঘুমে
ভালো বাজার করবার, সোনালি সবুজ মরশুমে
চেন দুলে উঠলো বুকে, তুমি চেয়ে দেখলে পথ
ঢেকে নিচ্ছে বিভিন্ন উৎপন্নের আড়ত
মায়া হোক, সমস্ত বস্তি অঞ্চলে
হোক ইন্দ্রজাল
আকাশ ফুঁড়ে, মাটি ঠেলে, হাওয়া চিরে
উঠে আসছে মাল, মাল, মাল
তুমি কোথায় পালাবে রাত্তিরে?
1 thought on “সৌমিত্র ঘোষের কবিতা”